স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের সড়কগুলোতে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছে না। জেলার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে। গত ১১ মাসে ৬৫টি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৮০ জন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে শান্তিগঞ্জ উপজেলায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরু সড়কে প্রশিক্ষণবিহীন চালক, নিবন্ধনহীন সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার বেপরোয়া চলাচল, সড়কের দুই পাশে ঝুলন্ত ডালপালা, গর্ত, পিচঢালা পথে মোড়ে দৃশ্যমানতা না থাকা - এসবই দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের সরব উপস্থিতি ও তদারকি বাড়ালে দুর্ঘটনা কমতে পারে বলেও তাদের দাবি।
এদিকে, বিআরটিএ সুনামগঞ্জ অফিসের তথ্যমতে, জানুয়ারিতে ১০ দুর্ঘটনায় ১২ জন, ফেব্রুরিতে ১২ দুর্ঘটনায় ১০ জন, মার্চে ৭ দুর্ঘটনায় ৮ জন, এপ্রিলে ৬ দুর্ঘটনায় ৬ জন, মে-জুনে মোট ৭ দুর্ঘটনায় ৬ জন, জুলাইয়ে ৮ দুর্ঘটনায় ৭ জন, আগস্টে ৫ দুর্ঘটনায় ৬ জন, সেপ্টেম্বরে ৫ দুর্ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু হয়।
সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জামালগঞ্জের লম্বাবাঁক এলাকায় বেপরোয়া ইজিবাইকের ধাক্কায় জাহেদুল ইসলাম (৫) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান জামালগঞ্জ থানার ওসি। এছাড়া গত ২৪ অক্টোবর শান্তিগঞ্জে পর্যটকবাহী বাস খাদে পড়ে মা-মেয়ে নিহত ও ১৫ জন আহত হন। এর আগেও একই এলাকায় ২৬ সেপ্টেম্বর মা-মেয়েসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের তথ্য মতে, প্রতিদিন সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে ৫০০ আন্তঃজেলা গাড়ি, ১০০-র বেশি আন্তঃজেলা বাস, প্রায় ৫০০ কার-মাইক্রো-হাইয়েস, আরও ৫০০ ট্রাক-পিকআপ চলাচল করে। বৈধ সিএনজি আছে ৫,৩০০টি, আর বৈধ কাগজপত্রবিহীন সিএনজি প্রায় আরও ৫ হাজার। লেগুনা আছে প্রায় দুইশ। সবই চলছে ২৪ ফুট প্রস্থ সড়কে।
হাইওয়ে পুলিশের ওসি সুমন কুমার চৌধুরী জানান, সড়কের পাশে গরু-ছাগল চড়ানো, বালি-পাথর স্তূপ করে রাখা এবং অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। নিরাপদ সড়কের জন্য আমরা সচেতনতামূলক কাজ করছি।
সুনামগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের ওসি মোহাম্মদ হানিফ মিয়া মনে করেন ‘বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিং-ই প্রাণহানির বড় কারণ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ককে ৪ লেন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শহরের ৪.৫ কিলোমিটার ও শান্তিগঞ্জের ২ কিলোমিটার এলাকায় ৪ লেন উন্নীতকরণের কাজ চলছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মোড়ে ‘লুকিং মিরর’ও স্থাপন করা হবে। এদিকে, সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের অবহেলার কারণে অনিবন্ধিত যানবাহন সড়কে চলাচল করে। অবৈধ যানবাহনের চলাচল বন্ধের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
সড়ক কবে নিরাপদ হবে? বাড়ছে দুর্ঘটনা-প্রাণহানি
- আপলোড সময় : ০৭-১১-২০২৫ ১১:৪৭:৪৪ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-১১-২০২৫ ১১:৫০:১৯ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ

স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক সুনামকণ্ঠ